বিসিবিতে নির্বাচন নাকি অ্যাডহক কমিটি?

 


২০২১ সালের ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের সবশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ৭ অক্টোবর বিসিবি পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। গেল বছর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে পদত্যাগ করেন পাপন।

এরপর নতুন করে এনএসসির কোটায় বিসিবির পরিচালক হয়ে পরে সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক আহমেদ। কিন্তু তিনি বেশি দিন টিকতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে বাকি পরিচালকরা অনাস্থা আনায় তার মনোনয়ন বাতিল করে এনএসসি। ফলে সভাপতির পদ হারান ফারুক।


ফারুকের পর তার মতো একই প্রক্রিয়ায় বিসিবির দায়িত্ব নেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বর্তমানে তিনিসহ ৯ জন পরিচালক মিলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব। তবে চলতি বোর্ডের চার বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। যে কারণে দরজায় কড়া নাড়ছে নির্বাচন।

গুঞ্জন রয়েছে অ্যাডহক কমিটিও হতে পারে নতুন করে। তবে কিছুদিন আগে বিসিবি সভাপতি বুলবুল গণমাধ্যমে বলেছিলেন, 'সব ঠিকঠাক করে বোর্ডের সঙ্গে বসে একটা নির্বাচন কমিশন করব। কাউন্সিলরদের চিঠি দেওয়া হবে।'


এদিকে বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকার ক্লাব সংগঠকদের বাঁধার মুখে সেই উদ্যোগ আর বাস্তবায়ন হয়নি। এবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুলবুল গঠনতন্ত্র সংশোধনের পথে হাঁটছেন না। অক্টোবরে নির্বাচন হলে তার আগে সংশোধনের সময়ও তেমন নেই বলে একাধিক পরিচালক জানিয়েছেন। তাতে নির্বাচন হলে বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যে কারণে বিসিবি নির্বাচন নাকি অ্যাডহক কমিটি কোনটা হবে জানতে যোগাযোগ করা হয় সাবেক পরিচালক রফিকুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে। আসন্ন নির্বাচনে তিনিও লড়বেন পনিচালক পদে। ঢাকা পোস্টকে বাবু বলেন, 'আমরা আশাবাদী নির্বাচন অক্টোবরেই হবে। পরিবেশ পরিস্থিতি নির্বাচনের জন্য অনুকূলে রয়েছে। এমন কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি যে নির্বাচন করা যাবে না। আমরা আশাবাদী ইন শা আল্লাহ সঠিক সময়ে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।'


বাবু জানালেন এখন আর অ্যাডহক কমিটির পরিবেশ নেই, 'যদি অ্যাডহক কমিটি হতো তাহলে ৫ আগস্টের পরে একটা সম্ভাবনা ছিল। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী এখন তো ভালো পরিবেশ আছে। বোর্ডের ১০ জন পরিচালক রয়েছে সভাপতিসহ তাদের একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে সামনে মেয়াদ শেষ হবে। এখন যথারীতি একটা নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে, সুতরাং এখন তো আর ওই পরিবেশ নেই যে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে বোর্ড পরিচালনা করতে হবে।'

এখন অ্যাডহক কমিটি হলে সেটাও গ্রহণযোগ হবে না দাবি করলেন বিসিবির সাবেক এই পরিচালক, 'এখন পরিবেশ তো নির্বাচনমুখী সুন্দর পরিবেশ। কোনো ঝামেলা নেই কিছুই নেই অ্যাডহক কমিটি হলে গ্রহণযোগ্য নয়, এটা হতে পারে না। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে এই বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এর আগে কাউন্সিলর বা অন্যান্য যেসব প্রক্রিয়া রয়েছে সেগুলো শুরু হবে আশা করি। আশা করছি অক্টোবরের শুরুতে অথবা সেপ্টেম্বরের শেষে নির্বাচন হবে ইন শা আল্লাহ।'


বিসিবির সাবেক আরেক পরিচালক সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর ঢাকা পোস্টকে বলেছেন, 'অবস্থা তো আসলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের যে গঠনতন্ত্র রয়েছে ওটাই তো আমাদের আসলে গাইডলাইন। তো ওটা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই একটা নির্বাচন হবে, একটা নির্বাচিত কমিটি আসবে এটাই নিয়ম আর কি। আর নিয়মের বাইরে যেটা করবে সেটা তো দায় দায়িত্ব তাদের।'


অ্যাডহক কমিটি হলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে কি না এমন প্রশ্নে আলমগীর বলেন, 'অ্যাডহক কমিটি তো কখনোই গ্রহণযোগ্য না। এটা তো আমাদের গঠনতন্ত্রইতেই নাই। আইসিসি বা অন্য যে বডিগুলো রয়েছে সেটাতেও অ্যাডহক কমিটি গ্রহণ করে না। আর গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করার যে সময় বা ওইটা এখন আর নাই আসলে।'


বিসিবির পরবর্তী বোর্ডে আসার ইচ্ছা রয়েছে কি না এমনটা জানতে চাইলে আলমগীর বললেন, 'ইচ্ছা তো আছেই, আসলে একজন সংগঠক হিসেবে তো থাকেই। ভালো পরিবেশ কতদূর কি হবে সেটার উপর নির্ভর করছে। ইচ্ছা তো রয়েছে একসময় যেহেতু ছিলাম।'

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরও ৪টি কমিশন গঠন করেছে সরকার

চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয়া মতিউর বেঁচে আছে,

ডাকসু নির্বাচন: কে হবেন ভিপি, কে হবেন জিএস? জানা গেলো সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম