পাকিস্তানে গিয়ে সেনা অভিযানে কীভাবে নিহত হলেন বাংলাদেশি তরুণ? যা বলছে বিবিসি
![]() |
| ছবি: সংগৃহীত |
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহতদের মধ্যে এক বাংলাদেশি তরুণও রয়েছেন বলে জানা গেছে। নিহত ওই তরুণের নাম ফয়সাল (২২)। তার বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ছোট দুধখালী গ্রামে।
গত শুক্রবার রাতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ১৭ জন নিহত হন। পাকিস্তানের সামা টিভি ও স্থানীয় সাংবাদিকদের বরাতে জানা যায়, নিহতদের একজন বাংলাদেশি নাগরিক। পাকিস্তানি সাংবাদিক জাওয়াদ ইউসুফজাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ ফয়সালের ছবি প্রকাশ করেন। একইভাবে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী প্ল্যাটফর্ম মাহাজও ফয়সালের ছবি প্রকাশ করেছে।
নিহত ফয়সালের চাচা আব্দুল হালিম রোববার গণমাধ্যমকে জানান, দেড় বছর আগে ২০২৪ সালের মার্চে দুবাই যাওয়ার কথা বলে দেশ ছাড়েন ফয়সাল। দেশ ছাড়ার পর প্রথমদিকে তিনি যোগাযোগ রাখলেও পরে তা কমে যায়।
আব্দুল হালিম বলেন, “দেশ থেকে বের হওয়ার সপ্তাহখানেক পর ফোন করেছিল। তখন জানায়, ভারতে আছে এবং সেখান থেকে দুবাই যাবে। চার মাস পর আবার ফোন করে জানায়, দুবাই আছে। কে বা কার মাধ্যমে গিয়েছে, তা বলতে চাইত না। বলত, এক ভাইয়ের সঙ্গে গিয়েছে, সেই খরচ দিয়েছে, বেতনের টাকা থেকে মাসে মাসে কেটে নেওয়া হয়।
”তিনি আরও জানান, ফয়সাল ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকত। তিন ভাই–বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল সে। ঢাকায় বিভিন্ন মসজিদের সামনে ও ওয়াজ মাহফিলের স্থানে টুপি, তসবিহ, জায়নামাজ ও ধর্মীয় বই বিক্রি করত।
পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ফয়সালের বড় ভাই আরমান এনজিওর চাকরি ছেড়ে গ্রামে চলে যান। গত কোরবানির ঈদের সময় মাদারীপুর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ তাদের বাড়িতে এসে ফয়সালের খোঁজ নিলে পরিবার প্রথম জানতে পারে যে সে পাকিস্তানে আছে।
হালিম জানান, “আমরা তাকে দেশে ফেরার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু সে বলেছিল, অনেক টাকা খরচ করে তাকে সেখানে নেওয়া হয়েছে, তাই দেশে ফিরতে পারবে না
।”পরিবারের কাছে ফয়সালের মৃত্যুর খবর পৌঁছায় রোববার। হালিম বলেন, “একজন সাংবাদিক ছবি পাঠিয়ে জানতে চান, এটি আমাদের ছেলে কি না। ছবি দেখে আমরা চিনতে পারি। এরপর ডিবি ও পুলিশও আসে।”
ফয়সালের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের সহায়তা চেয়ে হালিম বলেন, “যারা এসব কাজে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।”
সূত্র: বিবিসি।

মন্তব্যসমূহ